হোমযজ্ঞ কেবল একটি ধর্মীয় আচার বা রীতি নয়, এটি এক মহান জ্ঞানের পরম উৎস এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির একটি শক্তিশালী পথ। "যজ্ঞ" শব্দটি নিজেই বিষ্ণুকে বোঝায়, যিনি সর্বব্যাপী, সর্বত্র বিরাজমান। যজ্ঞের মাধ্যমে মানুষ বিশ্বচৈতন্যের সাথে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পায়। এই গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে কীভাবে হোমযজ্ঞের মাধ্যমে জীবনের পূর্ণতা, কল্যাণ ও চেতনার বিকাশ সম্ভব।
প্রাচীন যুগে দেবতারা যখন যজ্ঞ করতেন, তখন তা ছিল মানবজাতির জন্য একটি আদর্শ। আদিপুরুষ প্রজাপতি সৃষ্টির সূচনা করেছিলেন যজ্ঞ দ্বারাই – সেই ঐতিহাসিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই গড়ে উঠেছে আজকের হোমযজ্ঞের অনুশীলন। বৈদিক ও তান্ত্রিক – উভয় পথেই যজ্ঞের গুরুত্ব অপরিসীম, যদিও তাদের অনুষ্ঠানগত রূপ কিছুটা আলাদা।
এই গ্রন্থে হোমযজ্ঞের নানা প্রকার ও উদ্দেশ্য তুলে ধরা হয়েছে – যেমন নিত্য, নৈমিত্তিক ও কাম্য পূজা। এছাড়া, শাস্ত্রসম্মতভাবে কীভাবে হোম করতে হয়, কোন কোন মন্ত্র ও উপাচার প্রয়োজন, তা বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। হোমের মাধ্যমে অমঙ্গল দূর করে মঙ্গল প্রতিষ্ঠা করা এবং সার্বিক কল্যাণ সাধন – এই হল যজ্ঞের মূল লক্ষ্য।
গ্রন্থটি এমন এক মূল্যবান সংকলন, যেখানে প্রাচীন শাস্ত্র, ঋষিগণের অভিজ্ঞতা এবং সমকালীন গবেষণার নিপুণ মেলবন্ধন ঘটেছে। এটি কেবল হোমযজ্ঞের নির্দেশিকা নয়, বরং এক আধ্যাত্মিক অনুপ্রেরণা – যা প্রতিটি সনাতন ধর্মাবলম্বীর জীবনে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।